খুলনা | মঙ্গলবার | ০১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

২ হাজার ফিলিস্তিনি শিশু নিহত, সেভ দ্য চিলড্রেন

গাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে একটি করে শিশু হত্যা করছে ইসরায়েল

খবর প্রতিবেদন |
০১:১১ এ.এম | ২৫ অক্টোবর ২০২৩


গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। সংখ্যার বিচারে তা ছাড়িয়ে গেছে সাড়ে পাঁচ হাজার। এরমধ্যে ২ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার মাধ্যমে নির্বিচারে শিশু হত্যা করা হচ্ছে। বিগত ১৭ দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২ হাজার ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন গত সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজায় অন্তত ১০ লাখের বেশি শিশু স্রেফ ‘ফাঁদে’ পড়ে গেছে; যাদের যাওয়ার কোনো নিরাপদ জায়গা নেই, বিদ্যুৎ নেই, স্বাস্থ্যসেবা নেই, কিচ্ছু নেই। আছে কেবল মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ।
ইসরায়েলি বোমা হামলায় বিপুল পরিমাণ শিশুর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে উঠে এসেছে সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে। আন্তর্জাতিক এই সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত ১৭ দিনের যুদ্ধে গাজায় অন্তত ২ হাজার শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। আরো ২৭ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে পশ্চিম তীরে।
যুদ্ধবিরতির আহŸান জানিয়ে সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শিশুদের জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহŸান জানাচ্ছি এবং আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে সেই প্রচেষ্টার অংশীদার হয়ে সহায়তা করার আহŸান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলা গাজায় নির্বিচারে শিশু হত্যা করছে।
প্রতি ১৫ মিনিটে একটি করে শিশু হত্যা : গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় প্রতি ১৫ মিনিটে একটি করে শিশু নিহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের একটি বেসরকারি সংস্থা ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল-ফিলিস্তিন (ডিসিআইপি)।  
হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ছিটমহলে ইসরায়েল বোমা বর্ষণ শুরু করার পর থেকে প্রতিদিন শতাধিক শিশু নিহত হচ্ছে।
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলায়েএ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ডিসিআইপির এক মুখপাত্র বলেন, আমরা সরাসরি গণহত্যা প্রত্যক্ষ করছি।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত ১,৪০০ ইসরায়েলি নাগরিকের মধ্যে অন্তত ১৪ জন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে। হামাসের হাতে বন্দী প্রায় ২০০ জনের মধ্যে শিশুও রয়েছে। ইসরায়েল ওই হামলায় নিহতদের সবার ডেমোগ্রাফিক তথ্য প্রকাশ করেনি।
শিশুরা কি যুদ্ধে আইনগতভাবে সুরক্ষিত নয়?
হ্যাঁ, অবশ্যই শিশুরা আইনগতভাবে সুরক্ষিত। ১৯৪৯ সালে জেনেভা কনভেনশনের অধীনে সশস্ত্র সংঘাতের সময় কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, তা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়মগুলো পাস করা হয়েছিল। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যুদ্ধ-সংঘাতের সময় শিশুদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে।
হলোকাস্টের সময় ইউরোপে দেড় মিলিয়ন ইহুদি শিশু নিহত হওয়ার মাত্র কয়েক বছর পর ১৯৫১ সালে ইসরায়েল এই কনভেনশন অনুমোদন করে। কিন্তু ইসরায়েল চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনকে স্বীকৃতি দেয় না। কারণ এটা দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইরত বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করে।
গাজায় সামরিক শক্তির অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহারকে হামাসের বিরুদ্ধে বৈধ উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে ইসরায়েল। দখলদার ইহুদিদের দাবি, হামলায় শিশুসহ বেসামরিক মানুষের মৃত্যু যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে না।