খুলনা | শনিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

পদত্যাগপত্র নিয়ে যা জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

সবাই নন, পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদক |
০১:১৮ এ.এম | ২১ নভেম্বর ২০২৩


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয় উপদেষ্টার সবাই নন, তিনজন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী রোববার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
সরকারের মন্ত্রিসভার তিনজন টেকনোক্র্যাট (যাঁরা সংসদ সদস্য নন) মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পদত্যাগ করা মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আর পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা দায়িত্ব পালন করে যেতে পারবেন।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে টেকনোক্র্যাট দুইজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পদত্যাগপত্র কার্যকর করার পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়াটা তাঁরা শুরু করেছেন। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে সেটি (পদত্যাগপত্র) কার্যকর হবে।’
পদত্যাগপত্র কবে কার্যকর হবে, এমন প্রশ্নে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার পরে।’
তখন সাংবাদিকেরা আবার জানতে চান সাধারণত কয় দিন লাগে? জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ধরা-বাঁধা কোনো আইন নেই যে এত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। একটি প্রক্রিয়া আছে, যেহেতু অনুমোদন নিতে হবে।’
পদত্যাগের পর পদ শূন্য হচ্ছে, নির্বাচনের আগে রুটিন কাজের জন্য হলেও সেই সব পদে কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার কোনো নির্দেশনা আছে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে তো তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ হবে, সেটি যখন গেজেট (প্রজ্ঞাপন) হবে তারপর এই প্রসঙ্গ আসবে। তখন পদ খালি হবে।
সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী যেকোনো সময় কোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে অনুরোধ করতে পারবেন।
মন্ত্রীদের পদ শূন্য হওয়ার বিষয়ে সংবিধানে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো মন্ত্রীর পদ শূন্য হবে, যদি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দেন।
যা বললেন মোস্তাফা জব্বার : পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরদিন সোমবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয় যান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেখানে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, পদত্যাগপত্র যতক্ষণ পর্যন্ত গৃহীত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সেটি কার্যকর হয় না।
২০১৮ সালের নির্বাচনের সময়ের উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, ‘তখন ৬ নভেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম এবং সেটা কার্যকর হয়েছিল ওই বছরের ৬ বা ৭ ডিসেম্বর।’
যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগপত্র গৃহীত না হবে, ততক্ষণ কাজ করে যাবেন উলে­খ করে মোস্তাফা জব্বার জানান, আজ (সোমবার) সকালেও ছয়টি ফাইল নিষ্পত্তি করেছেন তিনি।
১৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এর ৪ দিনের মাথায় রোববার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা পদত্যাগপত্র জমা দেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৫ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও ৩ উপমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৪৮। ৩ জনের পদত্যাগের ফলে সংখ্যাটি কমে ৪৫-এ দাঁড়ালো।
পদত্যাগপত্র নিয়ে যা জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব : ছয় মন্ত্রী ও উপদেষ্টার পদত্যাগ গ্রহণ প্রক্রিয়া চলমান জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন বলেন, পদত্যাগপত্র কার্যকরের আগে তাদের অফিস করতে বাধা নেই। সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে টেকেনোক্র্যাটমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং চারজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র কার্যকর করার পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়াটা আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরে সেটা কার্যকর হবে।
পদত্যাগপত্র কবে কার্যকর করা হবে, সেই প্রশ্নে মাহবুব বলেন, ধরা বাধা কোনো আইন নেই যে এতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রক্রিয়া আছে, অনুমোদন নিতে হবে। পতত্যাগপত্র গ্রহণ করে গেজেট হবে, পদ যখন খালি হবে তখন শূন্য পদ মন্ত্রণালয় ভাগ করা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।
কোন তিন উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।
একজন মন্ত্রী অফিস করেছেন, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমরা যখন কার্যকর করব তখন আর অফিস করতে পারবেন না। এখন তাদের অফিস করতে বাধা নেই। 
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে পুরোটাই অবৈতনিক। তিনি কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না।
একজন মন্ত্রী অফিস করেছেন-দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যখন থেকে কার্যকর হবে, তখন আর অফিস করতে পারবেন না।
মন্ত্রিসভা ছোট হবে কিনা এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।