খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

খুলনার ৬টি নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী উত্তাপ নেই

জাহাঙ্গীর আলম |
০১:০১ এ.এম | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী উত্তাপ ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে। বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে না আসায় এবং সরকার দলীয় বিদ্রোহী অধিকাংশ শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় ভোটের মাঠে এখন কোন উত্তাপ নেই। 
খুলনা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল। ওই আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। তবে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় এ আসনে কোন শক্ত প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনী মাঠ একেবারে ঠান্ডা রয়েছে। 
খুলনা-২ আসনে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল আবারও নৌকার প্রার্র্থী হয়েছেন। এ আসনে কোন শক্ত প্রার্থী নেই। খুলনা-৩ আসনে সকলকে চমক দেখিয়ে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য বেগম মন্নুযান সুফিয়ানের অনুসারিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সড়ক অবরোধও করতে দেখা যায়। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি প্রার্থী না হওয়ায় এবং কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন সকলকে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে সামিল করতে সক্ষম হওয়ায় এ আসনেও নির্বাচনী কোন উত্তাপ নেই। 
খুলনা-৪ আসনে একাধিক হ্যাভিওয়েট প্রার্থী মনোনয়ন দৌড়ে থাকলেও বর্তমান সংসদ সদস্য শিল্পপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় খুলনা আওয়ামী লীগে এক সময়ের সিংহ পুরুষ সাবেক হুইপ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই এস এম মোর্তজা রশিদী দারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হন। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়ন বাতিল করেন। তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। সেখানেও তার মনোনয়ন বাতিল হলে খুলনা-৪ আসনেও নিরুত্তাপ নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে। 
খুলনা-৫ আসনে সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। যে কারণে তাকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। তার মনোনয়ন রিটার্নিং অফিসার বাতিল করেন। তিনি পুরনায় নির্বাচন কমিশনে আপিল করলেও মঙ্গলবার সেখানেও তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। যে কারণে খুলনা-৫ আসনে আবারও সংসদ সদস্য হওয়ার দ্বার প্রান্তে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা এলাকায় ছড়ানো উত্তাপও একেবারে নেই বললেই চলে। 
খুলনা-৬ আসনে কোন আলোচনায় না থাকা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রশীদুজ্জামান মোড়ল নৌকার টিকিট পেয়েছেন। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জি এম মাহাবুবুল আলম। তার মনোনয়ন রিটার্নিং অফিসার বাতিল করেন। তবে নির্বাচন কমিশনে আপিল করায় তিনি প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন। তাছাড়া জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলাম মধুর মনোনয়নও বৈধ হওয়ায় এ আসনে কিছুটা নির্বাচনী আমেজ রয়েছে। 
এদিকে আওয়ামী লীগের সাথে আসন ভাগাভাগি হলে খুলনা-৬ আসনটি ছেড়ে দিতে হতে পারে জাতীয় পার্টিকে। সেক্ষেত্রে মধুর মহাজোটের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 
অপরদিকে কমিশনে বাতিল হওয়া খুলনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মোর্তজা রশিদী দারা এবং খুলনা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন বলে শোনা গেছে।  উচ্চ আদালতে তাদের মনোনয়ন বৈধ হলে এ দু’টি আসনে আবারও নির্বাচনী আমেজ ফিরে আসবে বলে মনে করছেন অনেকেই।